সাজাপ্রাপ্ত হয়ে কাতার জেলখানায় ১৪৯ প্রবাসী বাংলাদেশি

কাতারের কারাগারে বর্তমানে সাজাপ্রাপ্ত বাংলাদেশি আসামির সংখ্যা ১৪৯ জন। এদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক আসামি সাজাপ্রাপ্ত হয়েছেন মদ-গাঁজা সম্পর্কিত অপরাধের দায়ে। এমন অপরাধে ৩ থেকে ৫ বছর মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত আসামির সংখ্যা ৭০ জন। কাতারে বাংলাদেশ দূতাবাস সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। দূতাবাসের প্রকাশিত এক হিসাবে দেখা গেছে, বর্তমানে কাতারের কারাগারে মদ-গাঁজা ছাড়াও মাদকদ্রব্য পাচারের অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত বাংলাদেশি কর্মী রয়েছেন ১৩ জন। এরা ১০ বছর মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত। এ ছাড়া ইয়াবা সম্পর্কিত অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত রয়েছেন আরও দুজন বাংলাদেশি, এদের সাজার মেয়াদ পাঁচ বছর করে।

কূটনৈতিক সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যমতে, কাতারে হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত দুজন বাংলাদেশি কয়েদি রয়েছেন।যৌন হয়রানির অপরাধে এক থেকে তিন বছর পর্যন্ত বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত কয়েদি রয়েছেন সাতজন। সমান সংখ্যক কয়েদি রয়েছেন চেক জালিয়াতির অপরাধে। তাদের সাজার মেয়াদ এক থেকে তিন বছর। চুরি ও ছিনতাইয়ের অপরাধে এক বছর থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ পাঁচ বছর পর্যন্ত সাজাপ্রাপ্ত বন্দির সংখ্যা ১৮।

ভিসা জালিয়াতির অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত রয়েছেন দুজন। তাদের শাস্তির মেয়াদ এক বছর থেকে সর্বোচ্চ তিন বছর। এ ছাড়া নেশাজাতীয় ওষুধ বহন বা সেবনের অপরাধে দণ্ডিত কয়েদি আছেন দুজন। এর বাইরে অন্যান্য অপরাধেও বেশ ক’জন সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তি রয়েছেন। সাম্প্রতিক সময়ে প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে মদ, গাঁজা ও ইয়াবা সম্পর্কিত অপরাধে জড়িয়ে পড়ার প্রবণতা বাড়ায় এটিকে অশনি সংকেত হিসেবে দেখছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কূটনীতিকরা। এতে কাতারে বাংলাদেশের শ্রমবাজার ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলেও আশঙ্কা তাদের।

পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, মদ গাঁজা সেবন ও চুরি-ছিনতাইয়ের অপরাধে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক বাংলাদেশি বর্তমানে কারাগারে সাজা ভোগ করছেন। প্রবাসী বাংলাদেশি বিশিষ্টজনেরা এটিকে পুরো বাংলাদেশি কমিউনিটির জন্য লজ্জাজনক বলছেন। তবে সাধারণ বাংলাদেশি কর্মীদের মধ্যে এসব বিষয়ে সচেতনতা তৈরিতে কোনো কার্যক্রম নেই কাতারস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস ও বাংলাদেশি কমিউনিটির সামাজিক সংগঠনগুলোর।

এ বিষয়ে দূতাবাসের এক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, দেশে বা বিদেশে কোথাও অপরাধে জড়িয়ে পড়া কাম্য নয়। বিশেষ করে বিদেশে জীবন-জীবিকার তাগিদে এসে আইনবহির্ভূত কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়া কেবল নিজের সর্বনাশ ডেকে আনা নয়, বরং এতে দেশের সম্মান ও মর্যাদা নষ্ট করার বিষয়টিও জড়িত। কাতারপ্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রতি সব সময় আইন মেনে সব ধরনের অপরাধ থেকে দূরে থাকতে আহ্বান জানিয়েছেন দায়িত্বশীল ওই প্রতিনিধি।